বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আমিরাত ভিসা সেন্টারের এসি ছিল ‘ত্রুটিপূর্ণ’ 

  •    
  • ১৩ জানুয়ারি, ২০২১ ২১:৩৯

গুলশান-২ এ ১৪ তলা ইম্পোরি ফিনান্সিয়াল সেন্টারের নিচ চলায় আরব আমিরাতের ভিসা সেন্টারের সেন্ট্রাল এসির আউটবক্স ভবনটির ছাদে। সেখানে মেরামতের কাজ শুরুর পর উপরে ঘটে বিস্ফোরণ। এতে প্রাণ যায় এক জনের।

কয়েকদিন ধরে গুলশানে সংযুক্ত আরব আমিরাত ভিসা সেন্টারের সেন্ট্রাল এসির সমস্যা চলছিল। সেই ত্রুটি সাড়ানোর কাজের সময়ে ঘটে বিস্ফোরণ। প্রাণ যায় এক টেকনিশিয়ানের। আহত আরও অনেকে।

রাজধানীর গুলশান-২ এ ১৪ তলা ইম্পোরি ফিনান্সিয়াল সেন্টারের নিচ চলায় আরব আমিরাতের ভিসা সেন্টারের সেন্ট্রাল এসির আউটবক্স ভবনটির ছাদে। সেখানে মেরামতের কাজ শুরুর পর ঘটে বিস্ফোরণ।

উপরে বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে আরব আমিরাতের ভিসা সেন্টারেও একটি বিস্ফোরণ হয়। এতে সেন্টারে কর্মরত অন্তত ছয় জন আহত হন। তাদের ইউনাইটেড হাসাপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

আরব ভিসা সেন্টারের সেন্ট্রাল এসিতে কয়েকদিন ধরে ভাল ঠান্ডা হচ্ছিল না। সমস্যা সমাধান করতেই টেকনিশিয়ান ডাকা হয় বলে জানিয়েছেন ভিসা সেন্টারের কর্মকর্তারা।

তারা জানান, মঙ্গলবার থেকে এসি মেরামতের কাজ চলছিল। বুধবার কাজ করার সময় উপরে হঠাৎ বিকট শব্দ হয়। উপরের শব্দের কিছুক্ষণের মধ্যে নিচে ভিসা সেন্টারে বিকট শব্দে বাইরের গ্লাস ও অফিসের নানা কাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

বিস্ফোরণের পর আরব আমিরাতের ক্ষতিগ্রস্ত ভিসা সেন্টার। ছবি: নিউজবাংলা

ভিসা সেন্টারের কর্মকর্তা শরিফ আহমেদ বলেন, ‘আমরা প্রথমে ১ টা ৪০ মিনিটের দিকে বিকট শব্দ শুনতে পাই। আমরা দ্রুত অফিস থেকে বের হই। বিস্ফোরণে অফিসের অনেক কাঁচের গ্লাস ও জিনিসপত্র মুহুর্তে ধ্বংস হয়ে যায়। আমাদের কয়েকজন সহকর্মী আহত হয়েছেন। পরে ছাদের উপর থেকে টেকনিশিয়ান আজিজুলের মরদেহ ফায়ার সার্ভিস নামিয়ে আনে।’

দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট। তবে তারা আসার পর কোনো আগুন পাননি। নিচতলায় ভিসা সেন্টার থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছিল।

ফায়ার সার্ভিসের উপ সহকারী পরিচালক নিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘আমরা আসার পর ছাদ থেকে এক জনের লাশ উদ্ধার করেছি। বিধ্বস্ত অবস্থায় পড়েছিল। নিচেও কয়েকজন আহত হয়েছেন। তবে আগুনে পুড়ে আহত হননি কেউ।’

কীভাবে বিস্ফোরণ ঘটেছে তা জানতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা।

এসি বিস্ফোরণে নিহত টেকনিশিয়ান আজিজুল হক

ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও অভিজ্ঞতা থেকে নিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘আমাদের ধারণা উপরে আউটবক্সে কাজ করার সময় বিস্ফোরণে মারা গেছেন টেকনিশিয়ান। আর বিস্ফোরণের প্রেসার পাইপ লাইন হয়ে নিচে ভিসা সেন্টারে নেমে এসেছে। যেটার প্রেসারে ভিসা সেন্টারে বিরাট শব্দে বাইরের গ্লাস ও ভেতরের সিলিংসহ অন্যান্য জিনিসপত্র ভেঙেছে।’

ঘটনাস্থলে মারা যাওয়া টেকনিশিয়ানের পরিচয় পাওয়া গেছে। তার নাম আজিজুল হক। কাজ করতে ‘এটেল’ নামক প্রতিষ্ঠানে। গুলশান ডিপ্লোমেটিক জোনের ডিসি আশরাফুল ইসলাম জানান, নিহতের বাড়ি ফরিদপুরের ভাঙাতে। তিনি এক ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে রাজধানীর শাহাজাদপুর থাকতেন। পেশা এসি মেকানিক। এ ছাড়াও এ ঘটনায় ভিসা সেন্টারের ছয় জন কর্মী আহত হয়েছে।

আজিজুলের মৃত্যুতে দিশেহারা স্ত্রী

খবর পেয়ে বেলা আড়াইটার দিকে ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন তার আজিজুলের স্ত্রী উর্মি বেগম।

উপস্থিত লোকজনের কাছে উর্মি জানতে পারেন তার স্বামী মারা যাননি। এই তথ্য বিশ্বাস করে স্বামী কোথায় আছে জানতে ছুটাছুটি করছিলেন। কিন্তু এরই মধ্যে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও সংবাদ কর্মীদের মাধ্যমে যখন জানতে পারেন তার স্বামী বিস্ফোরণ মারা গেছেন। স্বামীর মৃত্যুর খবরে নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি উর্মি।

বিস্ফোরণে নিহত আজিজুল হকের স্ত্রীর আহাজারি। ছবি: নিউজবাংলা

তখন বার বার দৌড়ে বিধ্বস্ত ভবনের ভিতরে স্বামীকে খুঁজতে যেতে চান উর্মি। কিন্তু পুলিশ ও স্বজনদের বাঁধায় ভেতরে যেতে পারেননি তিনি। এ সময় কোনো সান্ত্বনাই আটকাতে পারছিল না উর্মিকে। বার বার চিৎকার করে বলছিলেন, ‘আমার স্বামী কই? মানুষ এগুলো কি বলছে আমার স্বামী নাকি মারা গেছে! এসব মিথ্যা কথা, আমার স্বামীকে তোমরা আইনা দাও।’

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সেন্টারের অফিস অর্থাৎ ভবনের নিচ তলা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নিচ তলায় ভিসা সেন্টারের সামনের অংশের সব ভেঙে গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৪ তলা ভবনটিতে আরব আমিরাতের ভিসা সেন্টারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নয়টি অফিস রয়েছে। ভবনটিতে এখন সব অফিস সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে পুলিশ।

এ বিভাগের আরো খবর